বৃষ্টির দিনে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা !
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
“আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে জানি নে, জানি নে কিছুতে কেন যে মন লাগে না”
বৃষ্টি কার না ভালো লাগে,চারদিকে যখন রোদের দগ্ধতায় ওষ্ঠাগত প্রাণ।তখন হঠাৎ মেঘের ঘনঘটা। কালো মেঘে ছেয়ে গেছে আকাশ। ঠান্ডা বাতাসে গা শিহরে উঠতে লাগলো। প্রকৃতি যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে। দূর থেকে ভেসে আসছে বাতাসের শো শো শব্দ।এ বুঝি নামলো মুষলধারে বৃষ্টি।
বৃষ্টির দিনে এমন দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। তবে প্রকৃতিতেও আসে অন্য রকম এক আবহ ।যা দেখা মাত্রই যে কারো চোখ জুড়িয়ে যায়। বৃষ্টির দিনে শুধু প্রকৃতি নয় মানুষের মনেও আসে এক অন্য রকম পরিবর্তন।মন ছুটে যায় সেই দূরন্ত প্রান্তরে। যেখানে রয়েছে সুদূর সোনালী শৈশব । ফেলে আসা বৃষ্টিস্নাত গ্রামের মেঠোপথ। মনে পড়ে যায় ছোট বেলায় বৃষ্টির দিনে গাছ থেকে লাফিয়ে পানিতে পড়ার কথা, ফুটবল খেলার কথা।
বৃষ্টির দিন মানেই গ্রামের মানুষের কাছে এক অন্য রকম পরিবেশ। সারা দিন টিনের চালে বৃষ্টির রিম ঝিম শব্দ,যা শোনা মাত্র প্রাণ জুড়িয়ে যায়। বৃষ্টি নামার সাথে সাথেই গ্রামের মেয়েরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে পুতুল খেলা নিয়ে। আর ছেলেরা মেতে উঠে ফুটবল খেলায়। বৃষ্টি নামলে গ্রামের প্রতিটি ঘরে চাল এবং সিমের বিছি ভাজা হয়ে থাকে। চাল ভাজা আর সিমের বিছি ভাজা সামনে নিয়ে বসে গল্প গুজবে মেতে উঠে গ্রামের প্রতিটি পরিবার। আর ঘরের বউরা ব্যস্ত থাকে নকশী কাঁথা সেলাই নিয়ে।
তবে যান্ত্রিক শহরের বৃষ্টির দিনটা আবার একটু অন্য রকম।বৃষ্টির দিনে ঘরে বসে বৃষ্টির গান শুনা ব্যতীত আর তেমন কোন কাজ নেই শহরের মানুশগুলোর।তবে কর্মজীবি মানুষগুলোর ক্ষেত্রে নিয়মটা একটু ভিন্ন ধরনের। রোদ বৃষ্টি কিছুই তাদের স্পর্শ করতে পারে না।হাজার বৃষ্টি থাকলেও তারা ছাতা মাথায় বেড়িয়ে পড়ে কর্মের সন্ধানে।বৃষ্টির দিনে শহরের কর্মজীবি মানুষগুলোকে বৃষ্টির জন্য একটু ভোগান্তিতেই পড়তে হয়।কারণ বৃষ্টির দিনে ঠিক সময়ে গাড়ি খুজে পাওয়াটা একটু কঠিন।গাড়ির জন্য এ কর্মজীবি মানুষকে অপেক্ষা করতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা।
মানুষের সাথে সাথে বৃষ্টির দিনে খাঁচায় বন্ধী পাখিদের মধ্যেও কেমন একটা পরিবর্তন দেখা দেয়। খাঁচার মধ্যে বন্ধী পাখিরা সারাদিন ডানা ঝাঁপটায়।মনে হয় একটু ফাঁক পেলেই মুক্ত আকাশে উড়ে যাবে।
বহুদিন ভ্যাপসা গরমের পর আজ সারা দিনের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ইট পাথরে তৈরি শহরের মানুষেগুলোর জীবনের চলার পথে যোগ করেছে ভালোলাগার এক নতুন মাত্রা।
প্রতিক্ষণ/এডি/জুয়েল